রাশিয়া বিশ্বকাপ ২০১৮: বিশ্বকাপে স্পেন: হবে কি ২০১০ বিশ্বকাপের পুনরাবৃত্তি?
Selección de fútbol de España বা স্পেন জাতীয় ফুটবল দল। ইউরোপিয়ান ফুটবলের সাথে স্পেনের নামটি ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। কারন স্পেন বর্তমানে ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন। ২০০৮ সালে উয়েফা ইউরোপিয়ান ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে জার্মানিকে পরাজিত করে তারা এই শিরোপা অর্জন করার গৌরব অর্জন করে। ২০১২ সালে ইতালিকে ৪-০ গোলে পরাজিত করে স্পেন একমাত্র দল হিসেবে টানা দুবার ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন হয়। এছাড়া স্পেন ১৯৬৪ সালে ইউরোপীয়ান নেশন্স কাপ জয় করে ও ১৯৮৪ সালে ফাইনাল পর্যন্ত উন্নীত হয়।
রাশিয়া বিশ্বকাপ ২০১৮: বিশ্বকাপে স্পেন

এখন পর্যন্ত দলটি ১৪ বার ফিফা বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো ইউরোপীয় মাটিতে কাঁপন ধরান এই দল বিশ্বকাপ জিতেছে মাত্র একবার, ২০১০ এ। ১৪ বার বিশ্বকাপ খেলে মাত্র ১ টি কাপ ঘরে তোলা স্পেনের মত দেশের কাছে আশা করা যায় না। যদিও উপরের উদ্ধৃতি থেকে বোঝা যাচ্ছে ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে এই স্পেন সবার ভীতি। জার্মানির মত স্পেনও ১৯৩০ এ প্রথম বিশ্বকাপে অংশ গ্রহণ করে নি। ১৯৩৪ এর কাপে কোয়াটার ফাইনাল পর্যন্ত উঠে। ১৯৩৮ থেকে ১৯৫৮ পর্যন্ত মাত্র একবার বিশ্বকাপ খেলেছে এবং চতুর্থ স্থান অধিকার করেছিল।
তারপর ১৯৬২ থেকে শুরু করে ক্রমান্বয়ে ২০০৬ পর্যন্ত স্পেনের ফুটবলের অবস্থা বর্তমান স্পেনের কাতালুনিয়া প্রদেশের মত। এমনকি ১৯৭০ এবং ১৯৭৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপে তো স্পেন কোয়ালিফাইড হয়নি। ২০১০ এর বিশ্বকাপ জয়ের আগেও ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে স্পেন কোয়াটার ফাইনালেও উঠতে পারেনি। তারপর হঠাৎ ২০১০ এ প্রথম স্থান অধিকার করে। ২০০৬ এর কাপে স্পেন নবম স্থানে ছিলো এবং সর্বশেষ বিশ্বকাপে স্পেনের অবস্থান আরো খারাপের দিকে।
বার্সেলোনা রিয়াল মাদ্রিদ এর মত ক্লাবের দেশের বিশ্বকাপে করুণ অবস্থা। ১০ এর বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাতে যেয়ে যে বিজর অর্জন করেছিল তার ধারাবাহিকতা কি এবার বজায় থাকবে? এই প্রশ্নের উত্তর খুব কঠিন কেনো না ২০১০ এর পরের বিশ্বকাপেইত স্পেন তার স্থান হারিয়ে ফেলেছে এবং সেটা খুব ভালভাবেই। আর এবারত আছে স্পেনের নিজের মধ্যকার সমস্যা। কাতালুনিয়া সমস্যা। হয়ত এই কাতালুনিয়া সমস্যা এখন তেমন একটা প্রভাব ফেলবে না কিন্তু তবুও একটা লুজ এ্যান্ড থেকে যায়।

ইউরোকাপে এত ভাল খেলা সত্ত্বেও কেনো স্পেন বারবার বিশ্বকাপে পিছিয়ে পরে তার জবাব অনেকেই দেবার চেষ্টা করেছেন। কেউ বলেন স্পেন লীগের খেলাকে এত বেশী গুরুত্ব দিচ্ছে যে অন্যদিকে নজর দিতে পারছে না। যদিও এসব মতামত তেমন একটা গ্রহণ যোগ্য না। আবার কেউ কেউ বলেন “স্পেন ইউরোপিয়ান কাপে বেশী মনোনিবেশ করছে তাই বিশ্বকাপে পিছিয়ে পরছে। ঘটনা যায় হোক। ফলাফল সেই একই আর তা হলো স্পেনের বিশ্বাকাপে আশানুরূপ ফল না পাওয়া।
১৯৬২ এবং ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপে স্পেন গ্রুপ স্টেজেই বাদ পরে এবং যথাক্রমে ১২ তম এবং ১০ তম স্থান পায়। তারপর ১৯৮৭ থেকে শুরু করে ২০০৬ সাল পর্যন্ত স্পেন ৫ এর নীচেই আসতে পারেনি। এর মাঝে আবার ১৯৮২ সালে নিজের মাটিতে খেলার সুযোগ পায় এবং করুণ বিষয় হলো নিজ মাটিতেও স্পেন ১২ তম স্থানের অধিকারী হয়। তবে এবারের রাশান বিশ্বকাপে স্পেনের অনেক আশা আছে।
আসলে স্পেনের ক্ষেত্রে আগে থেকে কিছুই বলা যায় না। ২০১০ এর আগেও কেউ ভাবতে পারেনি স্পেন এই ভাবে সবায় কে তাক লাগিয়ে দিবে। ২০০৬ এর বিশ্ব কাপের খারাপ অবস্থা থেকে স্পেন নিজেকে এক ধাক্কায় উপরে তুলে দিয়েছিল। এবং এবারো যে তা হবে না তার কোন গ্যারান্টি নেই। কেনোনা এই স্পেনের আছে ইউরোকাপের ব্যাপক সফলতা।
এক নজরে বিশ্বকাপে স্পেন
বছর | অবস্থান |
---|---|
১৯৩০ | অংশগ্রহন করেনি |
১৯৩৪ | কোয়ার্টার ফাইনাল |
১৯৩৮ | প্রত্যাহার |
১৯৫০ | সেমি ফাইনাল (৪র্থ) |
১৯৫৪ | বাছাই পর্ব |
১৯৫৮ | বাছাই পর্ব |
১৯৬২ | গ্রুপ পর্ব |
১৯৬৬ | গ্রুপ পর্ব |
১৯৭০ | বাছাই পর্ব |
১৯৭৪ | বাছাই পর্ব |
১৯৭৮ | গ্রুপ পর্ব |
১৯৮২ | রাউন্ড ২ (রাউন্ড অব ১২) |
১৯৮৬ | কোয়ার্টার ফাইনাল |
১৯৯০ | রাউন্ড অব ১৬ |
১৯৯৪ | কোয়ার্টার ফাইনাল |
১৯৯৮ | গ্রুপ পর্ব |
২০০২ | কোয়ার্টার ফাইনাল |
২০০৬ | রাউন্ড অব ১৬ |
২০১০ | চ্যাম্পিয়ন |
২০১৪ | গ্রুপ পর্ব |
Sources: